কোন ব্যক্তি নামায পড়লে তার সামনে হাঁটাচলা করা গুনাহের কাজ। নবী করিম (সাঃ) বলেছেন তোমরা যদি জানতে নামাজ পড়া ব্যক্তির সামনে দিয়ে হাঁটাচলা করা কত বড় অপরাধ, তাহলে তোমারা নামাজ পড়া ব্যক্তির সামনে প্রয়োজনে হাঁটাচলা না (অর্থাৎ একপাশ থেকে অন্য পাশে যাবে) করে কষ্ট করে এমন পরিস্থিতিতে ৪০ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে।
ওলামায়ে কেরামগন ৪০ বলতে কেউ কেউ মিনিট, কেউ কেউ ঘন্টা, কেউ কেউ দিন, মাস ও বছর বুঝিয়েছেন।
রাসুল (সাঃ) বলেন, তোমার নামাজের সামনে দিয়ে যদি কেউ হাঁটতে যায়, তার সাথে লড়াই করো। এটা শয়তান।
এই হাদিসে লড়াই করা বলতে মারা মারি-কাটা কাটি করা বুঝায় নি। এখানে বাঁধা দেওয়া বুজানো হয়েছে। অর্থাৎ- যদি কেউ তোমার নামাজরত অবস্থায় তোমার নামাজের সামনে দিয়ে হেটে যায়, তাহলে তাকে বাঁধা দাও।
নামাজের সামনে দিয়ে হাঁটা চলার ৩ টি নিয়ম আছে। তার মধ্যে ১ টি হলো না জায়েজ আর বাকি ২ টি জায়েজ। নিচে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
এক – এদিক থেকে ঐদিক যাওয়াঃ
এটা না জায়েজ। কেউ নামাজ পড়া অবস্থায় তার সামনে দিয়ে একদিক থেকে অন্যদিকে বা একপাশ থেকে আরেক পাশে যাওয়া এটা না জায়েজ।
দুই – সামনে থেকে উঠে যাওয়াঃ
এটা জায়েজ। আপনি নামাজি ব্যক্তির সামনে বসে আছেন। অর্থাৎ- কেউ যখন আপনার পিছনে বরাবর নামাজ আদায় করতেছে আর আপনি তার সামনে বসে আছেন, তখন আপনি তার সামনে থেকে উঠে আসতে পারবেন। এটা জায়েজ। তবে যদি আপনার কোন জরুরত না থাকে তাহলে ঐ ব্যক্তির নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত বসে থাকা উত্তম। আর জরুরত থাকলে উঠে যাওয়া গুনাহের কাজ না। তবে উঠে যাওয়ার সময় যদি চুতরা দিয়ে উঠে উঠে জান তাহলে আর কোন সমস্যা নাই। চুতরা দেওয়ার পর চুতরার সামনে দিয়ে হাঁটাচলায় কোন বাঁধা নাই।
তিন – সামনে গিয়ে দাঁড়ানোঃ
এটা জায়েজ। নামাজি ব্যক্তি নামায পড়তেছে, আপনি তার সামনে বরাবর যে দাঁড়াবেন বা জামাত শুরু হয়ে গেছে, তখন ঠিক তার সামনে জায়গাটা ফাঁকা আছে তাইলে আপনি ডান থেকে বা বাম থেকে বরাবর তার সামনে এগিয়ে গেলে এতে কোন সমস্যা হবে না।
অর্থাৎ- কোন ব্যক্তি যখন নামায পড়া অবস্থায় থাকে। তখন তার সামনে যদি দাড়ানোর যায়গা থাকে তাহলে একপাশে থেকে সোজা গিয়ে দাঁড়ানো যাবে। মনে করেন মসজিদে জামাত হচ্ছে, সবাই জামাতে দাঁড়িয়ে দিয়েছে। তখন যদি দেখা যায় যে, নামাজে দাঁড়ানো কোন ব্যক্তির সামনে ফাঁকা যায়গা আছে, তাহলে সেই যায়গায় গিয়ে দাঁড়ানো যাবে।
শেষ কথাঃ
যখন কেউ নামাজে দাঁড়াবে তখন তার কর্তব্য হলো মানুষের হাঁটা-চলা ব্যাঘাত হতে পারে এমন যায়গায় না দাঁড়ানো। বা তিনি লম্বা নামাজের নিয়ত করার ইচ্ছা থাকে তাহলে অবশ্যই তিনি সামনে সুতরা রেখে তারপর নামাজ পড়বেন।
রাসুল (সাঃ) বলেছেন, কেউ যখন নিজে নিজে নামাজ পড়ে সে যেন কোনকিছুকে সামনে রেখে নামাজ পড়ে, যাতে করে মানুষের চলাচলে অসুবিধা বা মানুষের হাঁটা-চলায় ব্যাঘাত না হতে পারে।